আপনি যেভাবে একজন ভালো শ্রোতা হতে পারবেন
একজন ভালো শ্রোতা হতে পারা বা মানুষের কথা মনযোগ দিয়ে শোনা ও বুঝতে পারা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্কিল যা জীবনে চলার পথে আপনাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করবে। উদাহরনস্বরূপ, আপনি যদি একজন ভালো শ্রোতা হন তবে আপনি আপনার কোন পরিবারের সদস্য, আপনার কোন বন্ধু, কলিগ এবং বিভিন্ন আত্মীয়রা আপনার কাছে তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে আসবে। আপনি যদি মনযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনেন তাহলে তবে তারা নিজেদের মনকে হাল্কা করার একটা সুযোগ পাবে; আবার আপনার ক্যারিয়ারে সফল হতেও এই গুনটি আপনার কাজে লাগবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে আমরা জেনে আসি কেমন করে আপনিও হতে পারেন একজন ভালো শ্রোতা।
পেজ সুচিপত্রঃ ভাল শ্রোতা হবার উপায় সমূহ
বক্তার দিকে তাকান ও চোখে চোখ রাখুন
কেউ যখন আপনার সাথে কথা বলবে তখন আপনি তার চোখের দিকে তাকাবেন। আপনি যে বক্তার
কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন তা বক্তাকে বোঝানোর জন্য তার এক চোখের দিকে পাঁচ সেকেন্ডের
জন্য তাকাবেন, আবার অন্য চোখের দিকে একই সময় ধরে তাকাবেন এবং সবশেষে তার মুখের
দিকে তাকাবেন।
যদি আপনি বক্তার থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে চান তবে তার চেহারার পাশে অথবা উপরের
দিকে নজর দেওয়া ভালো। আপনি যদি মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকেন তাহলে বক্তার মনে হতে
পারে আপনি তার কথা শুনতে আগ্রহী নন।
কেউ যখন আপনার সাথে কথা বলবে তখন আপনার হাতে হাত গুটিয়ে রাখা উচিৎ হবে না। যদি
আপনি বসে থেকে কথা শুনেন তাহলে আপনি সামনে অথবা পাশের দিকে সামান্য একটু ঝুঁকে
থাকেবেন। যদি আপনি সময়ে সময়ে হাল্কা মাথা ঝোঁকান তবে বক্তা বুঝতে পারবে
আপনি তার কথা শুনছেন।
আরও পড়ুনঃ এই লিঙ্কটা আপাতত ফাঁকা থাকবে
বক্তার দেহভঙ্গির দিকে নজর রাখুন
একজন লোক যখন কথা বলে তখন সে শব্দ ছাড়াও দেহের অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে সে নিজের
সম্পর্কে অনেক তথ্য প্রকাশ করে। আপনি যখন কারও কথা শুনছেন তখন তার বডি
ল্যাঙ্গুয়েজ এর দিকে আপনার তাই মনযোগ দেওয়া উচিৎ।
উদাহরন হিসেবে বলা যায় আপনি যার সাথে কথা বলছেন সে কি হাসছে, সে কি ভেতরে ভেতরে
রেগে আছে, সে কি কথা বলার ফাঁকে এমনভাবে চোখ কচলাচ্ছে যে মনে হয় সে ক্লান্ত অথবা
তার ঘুম হয়নি।
এমনকি ফোনে কথা বলার সময়েও আপনি বক্তার গলার স্বর শুনে তার মনের অবস্থা সম্পর্কে
অনেক কিছু ধারনা করতে পারবেন।
কথার মাঝখানে কথা বলবেন না
একজন লোক যখন কথা বলছে তখন আপনার উচিৎ হবে তাকে তার কথা শেষ করতে দেওয়া। আপনি যদি
প্রায়ই তার বক্তব্যের মাঝে কথা বলতে থাকেন তাহলে বক্তা ভাবতে পারে যে আপনি তাকে
পাত্তা দিচ্ছেন না অথবা আপনার কাছে তার কথা শোনার সময় নেই।
আপনি যদি স্বভাবগত ভাবেই দ্রুত কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে জোর করে
হলেও আস্তে কথা বলতে হবে যাতে অপর ব্যাক্তি বাধাহীনভাবে কথা বলতে পারে। মনে
রাখবেন, কথা বলার ফাঁকে বক্তা যদি কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিরতি নেয় তার মানে এই না
যে আপনাকে কথা বলতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি বক্তাকে শান্তিতে কথা বলতে দেন তবে সে
কি বলতে চাচ্ছে তা বোঝা আপনার জন্য সহজ হবে।
বক্তাকে ইঙ্গিত করুন আপনি তার কথা শুনছেন
কারও কথা শোনার সময় আপনার উচিৎ হবে আপনার মাথা সময়ে সময়ে একটু নাড়ানো, একটু হাঁসা
এবং জ্বি ও আচ্ছা ইত্যাদি শব্দ ব্যাবহার করার মাধ্যমে বক্তাকে
বোঝানো যে আপনি তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন এবং আপনি চান যে সে তার বক্তব্য চালিয়ে
যাক।
শোনার সময় ঘন ঘন ঘড়ি দেখা, কোন কিছু হাত দিয়ে নড়াচড়া করা এবং চুলে হাত দেওয়া
ইত্যাদি থেকে বিরত থাকুন।
আরও পড়ুনঃ এই লিঙ্কটা আপাতত ফাঁকা থাকবে
কিছু না বুঝলে বক্তাকে প্রশ্ন করুন
আপনি কারও কথা শোনার সময় আপনার যদি কোন একটা কিছু বুঝতে সমস্যা হয় তবে আপনার উচিৎ
বক্তাকে সে ব্যপারে প্রশ্ন করে ক্লিয়ার হয়ে থাকা। বক্ত্যবের কোন একটি অংশ বুঝতে
না পারলে বক্তার থেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করুন, "আপনি
কি অমুক বোঝাতে চাচ্ছেন..." অথবা "আমি ঠিক বুঝলাম না আপনি কি বলতে চাচ্ছেন..."
এছাড়াও বক্তাকে উৎসাহিত করার জন্যে আপনি "তারপর কি হল?" বা "তারপরে আপনি কি
করলেন?" জাতীয় প্রশ্ন করতে পারেন।
বক্তার উপর নিজের মতামত বা সমাধান চাপিয়ে দিবেন না
কারও কথা মনযোগ দিয়ে শোনা বিশেষ করে সে যদি কোন সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে আসে তবে
তার উপর নিজের মতামত বা সমাধান চাপিয়ে দেওয়া আপনার উচিৎ হবে না। বেশিরভাগ সময়েই
দেখা যায়, একজন ব্যাক্তি যখন তার ব্যাক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা নিয়ে আপনার সাথে
কথা বলে সে কিন্তু তার মনকে হাল্কা করার জন্যেই আপনার কাছে এসেছে। গবেষনায়
দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের জীবনের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে ভালোবাসে।
আপনি যদি সত্যিই কাউকে আপনার মতামত শোনাতে চান তাহলে আপনার উচিৎ হবে বক্তা কি
সত্যিই
আপনার মতামত শুনতে চায় কি না তা জেনে নেওয়া। "আপনি কি আমার একটা কথা শুনবেন?"বা
"আমি একটা উপদেশ দেই?" এই জাতীয় প্রশ্ন করে আপনি তা জেনে নিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ এই লিঙ্কটা আপাতত ফাঁকা থাকবে
আপনি যেভাবে একজন ভালো শ্রোতা হতে পারবেনঃ শেষ কথা
আপনি যদি সত্যিই একজন ভালো শ্রোতা হতে চান তবে আপনাকে সচেতন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে
যেতে হবে। আমি আশা করছি এই আর্টিকেলে প্রকাশিত কৌশলগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার
লক্ষ্যে পৌছুতে পারবেন।
আপনার যদি এই আর্টিকেল নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তবে আমাকে কমেন্ট করে আমাকে
জানাতে ভুলবেন না। সেই পর্যন্ত সবাইকে যানাই Goodbye!
আমার ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url